উদ্ধার ডায়েরি, তদন্তে পুলিশ! কমলিকার আত্মহত্যা ঘিরে করিমগঞ্জে চাঞ্চল্য

Spread the love

সুস্মিতা দাস, করিমগঞ্জ : আজ থেকে ঠিক চব্বিশ বছর আগে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনাকে ঘিরে উত্তাল হয়ে উঠেছিল করিমগঞ্জ।

সে দিনের উত্তেজনার আবহে যে ছয় বছরের একটি শিশুকন্যা সবার নজর কেড়েছিল, আজ ঠিক চব্বিশ বছর পর সেই মেয়ের আত্মহত্যার ঘটনায় গোটা শহরজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।

শুক্রবার শহরের মিশন রোডের পাগলা পট্টি এলাকায় তার মামার বাড়িতেই কমলিকা ভট্টাচার্য নামের  মেয়েটির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

বাড়ির দোতলার একটি বন্ধ ঘর থেকে কমলিকা ওরফে রিয়ার লাশ উদ্ধার হয়।

জানা গেছে, আজ সাতসকালে কাজের এক পরিচারিকা বাড়িতে এসে ঘর বন্ধ দেখে তার সন্দেহ জাগে। তারপর দরজা ভেঙে আবিষ্কার হয় রিয়ার ঝুলন্ত দেহ।

খবর পেয়ে সদর পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে এসে লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়।

রিয়ার ঘর থেকে একটি ডায়েরি উদ্ধারের খবর রয়েছে যদিও, এব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রতাপ দাসকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি তদন্তের অজুহাতে কিছুই বলতে চাইছেন না।

একটি সূত্রে জানা গেছে রিয়ার ডায়েরি লিখার অভ্যাস দীর্ঘদিনের।

তাঁকে জীবনে অনেককিছু দেওয়ার জন্য রিয়া ডায়েরিতে নাকি ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে বারবার ধন্যবাদ জানিয়েছে।

এমনকি ডায়েরিতে রাজেশ নামের এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে হওয়ার কথাও লিখে গেছে, যদিও পুলিশ এই ডায়েরির বিষয়বস্তু নিয়ে কিছু বলতে চাইছে না।

রিয়া ঠিক কী কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে সে ব্যাপারে সঠিক করে কিছু বলা যাচ্ছেনা।

বাড়ির বাকি লোকদের বয়ান অনুযায়ী গতকাল রাত রিয়া রাতের খাবার খেয়েছিলেন, দেখতে হাসিখুশি লাগছিল তাঁকে।

এমনকি এক মাসির সঙ্গে টেলিফোনে নাকি কথাও বলেছিলেন।

অনুমান করা যাচ্ছে রাজেশ দাস নামের ছেলেটির সঙ্গে রাতে কথাও হয়েছে। এরপর হয়তো কোনো এক বিষয় নিয়ে মতানৈক্য দেখা দেওয়ায় চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে বসে রিয়া।

সূত্র মতে জানা গেছে, রিয়ার মামা রিংকু ভট্টাচার্য পুজোর সময় পা ভেঙে বর্তমানে শিলচরে। গতকাল রিয়া বাড়িতে একাই ছিলেন।

কী থেকে যে কী হয়ে গেল, বুঝতেই পারছেন না মামা রিংকু।

মেয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় রিয়ার বাবা কামদেব ভট্টাচার্য সাতসকালেই গুয়াহাটি থেকে করিমগঞ্জ অভিমুখে রওয়ানা দেন।

কামদেব এই প্রতিবেদককে জানান, তাঁর পৌঁছা পর্যন্ত রিয়ার দেহ রাখার জন্য পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করেছেন।

আজ থেকে ঠিক পনেরো দিন আগেও মেয়ের সঙ্গে টেলিফোনে কথাও হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে রিয়ার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই শহরে যেন চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে, নেটপাড়ায় রিয়ার ফটো সমেত দুঃখ প্রকাশ করেছেন কতশত মানুষ।

রিয়া নিয়ে এতো শহরবাসীর আগ্রহ থাকার কিছুটা কারন অবশ্যই রয়েছে।

মেয়েটি সোশাল মিডিয়ায় বেশ পপুলার, ভালো শিক্ষিকা, ভালো ফ্যাশন ডিজাইনার, ভালো মেক আপ আর্টিস্ট আরও কত গুণে গুণী ছিলেন রিয়া।

রিয়া সম্পর্কে যেসব তথ্য জানা গেছে, তা হচ্ছে ঠিক এরকম – মায়ের মৃত্যুর পর কমলিকা ভট্টাচার্য অর্থাৎ রিয়া ২০০০ সাল থেকেই তার মামার বাড়িতে থাকতেন।

১৯৯৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর কামদেব ও রুবি ভট্টাচার্যের ঘর আলো করে জন্মেছিলেন রিয়া।

জন্মের সার্টিফিকেটে নাম রাখা হয়েছিল কমলিকা। মায়ের রহস্যজনক মৃত্যুর পর বাবার সঙ্গে সম্পর্ক একেবারে ছিন্ন হয়ে যায়।

২০০০ সালের রুবি হত্যাকাণ্ড নিশ্চয়ই অনেকের মনে আছে। মাস ছয়েক আগে এই হত্যাকাণ্ড মামলা থেকে খালাস পেয়ে যান রিয়ার বাবা কামদেব ভট্টাচার্য।

দীর্ঘ এই চব্বিশ বছরে বাবা মেয়ের মধ্যে বার কয়েক সম্পর্ক ভালো হয়েছিল, আবার তিক্ততাও দেখা দেয়।

মেয়ে রাজেশ দাস নামের ছেলের সঙ্গে প্রেম করছেন, এই বিষয়টিও জানতেন কামদেববাবু। তিনি এই প্রতিবেদককে জানান যে রাজেশের সঙ্গে তাঁর কথাও হয়েছিল টেলিফোনে।

এরপর একদিন রিয়া নিজেই তাঁর বাবাকে ফোন করে রাজেশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে আপত্তি জানান।

গত দশদিন আগেও হোয়াটসঅ্যাপ-এ রিয়ার সঙ্গে কথা হয়েছে কামদেববাবুর বলে জানিয়ে তিনি বলেন, রিয়ার আত্মহত্যা করার কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।

এদিকে রিয়ার ব্যবহৃত মোবাইল সহ আনুষাঙ্গিক সামগ্রী পুলিশ জব্দ করেছে। এখান থেকেই কোনো না কোনো তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

Gana Awaz Desk

Avatar

create token < a href="https://capablemachining.com/">china cnc milling bep20 token create a usdc token create crypto token create a bep20 token create a token ethereum token stripe token create bnb token create token create a token token mint mint club token