করিমগঞ্জ, ৯ অক্টোবর : আমার দাদুর বাড়ি করিমগঞ্জ। মা-য়ের দেশে বারবার আসতে ভালো লাগে। কারণ এখানের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা আমাকে বারবার আসতে উৎসাহ দেয়। তাই সুযোগ পেলেই এখানে চলে আসি। এখানের মানুষ ধর্মের গণ্ডি পেরিয়ে বাংলার ভ্রাতৃত্বকে বেশি প্রাধান্য দেয়। কারণ একসময় এপার-ওপার এক দেশ ছিল।
রাজনৈতিক কারণে দেশভাগ হলেও মনের একাত্মতা আজও অটুট। আমাদের ভাষা-শিল্প-সংস্কৃতি সবকিছুই এক। ‘শারদ সম্মান’ গ্রহণ করে এভাবেই নিজের মত ব্যক্ত করেন সমাজকর্মী, সাংস্কৃতি প্রেমী তথা বাংলাদেশের সংসদ সদস্যের প্রতিনিধি এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি কমিটির জকিগঞ্জ প্রশাসনিক কমিটির সহযোগী সদস্য এমএজি বাবর। খুশি স্মৃতি সংস্থা আয়োজিত বিজয়া সম্মেলনে বাবরকে ‘শারদ সম্মান’ দেওয়া হয়।
দুই দেশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত আমাদের বন্ধু দেশ। এই দেশের জন্য আমাদের স্বাধীনতার পাশাপাশি একাত্তরের আন্দোলনে পাকিস্তানের নির্যাতনের শিকার হওয়াদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো। তখন শুধু সরকার নয়, সাধারণ নাগরিকরাও বাংলাদেশের নাগরিকদের পাশে ছিলেন, যা বাংলাদেশের নাগরিকরা কখনো ভুলবেন না।
তিনি আরো বলেন, বিজয়া দশমী উৎসব মানুষের মধ্যে ঐক্যতা নিয়ে আসে। বিসর্জনে জকিগঞ্জ এবং করিমগঞ্জে দুর্গা যেন একাকার হয়ে যায় কুশিয়ারা নদী। দুই পারে প্রশাসনিকস্তরে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি মানুষের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা আর যত এক বিরল দৃশ্য।
রবীন্দ্রসদন মহিলা মহাবিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ড. শর্মিষ্ঠা খাজাঞ্চি বলেন, ভারতের লোকেরা সনাতন ধর্ম মতে ‘অতিথি দেব ভব’–এই বার্তাকে সামনে রেখে প্রতিজন অতিথিকে দেবতুল্য মনে করেন এবং তাকে বরণ করে সম্মান জানান। নৃত্যগুরু সুলেখা দত্ত চৌধুরী বলেন, বাঙালিরা শিল্প সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে দু’দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বভাব জাগিয়ে রেখেছে।
রাজনৈতিক বেড়াজল থাকলেও সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান আজ অন্য মাত্রায় রূপ নিয়েছে। এদিনের অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন করিমগঞ্জ মহিলা সেলের সভানেত্রী মহাশ্বেতা চক্রবর্তী, বরাক উপত্যকা বঙ্গসাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্মেলন-এর শহর সমিতির সভাপতি সৌমিত্র পাল, রবীন্দ্রসদন মহিলা কলেজের অধ্যাপিকা তনুশ্রী ঘোষ, শিক্ষক অমরকৃষ্ণ সাহা, প্রবীর দাস চৌধুরী, রঞ্জিত দেব, বিষ্ণুপদ নাগ, অরূপ রায় প্রমুখ।