শিলচর,২৯ অক্টোবর: গর্বের বাঙালি, খাঁটি বাঙালি কি পরিচয় আমার, আমাদের। কারণ বর্তমান বাঙালির জন্য ভয়ঙ্কর সময়।
ভাষা আক্রান্ত আমরা। ধর্ম নয়, ভাষাই জাতিকে রক্ষা করে। যে কোনো জাতিগোষ্ঠীর পরিচয় হয় ভাষা দিয়ে। ধর্ম দিয়ে জাতির পরিচয় হয় না।
কিন্তু বর্তমান ধর্ম দিয়ে এক হবার জোর চেষ্টা চলছে। ধর্ম দিয়ে যদি সবকিছু হতো, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যের সব মানুষ একি ধর্মের, কিন্তু সেখানে অনেক দেশ। একটি দেশ ও জাতির উন্নতিতে মাতৃভাষার গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু মাতৃভাষা এখনও সংকটের কবলে।
বর্তমান আমরা যারা আছি, তাঁরা নতুন প্রজন্মকে নিজের মাতৃভাষা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান দেওয়া অবশ্যই কর্তব্য। তাহলেই সে নিজের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতেও তার সঠিক মূল্যায়ন করতে পারবে।
শুক্রবার সন্ধ্যারাতে শিলচরের কাছাড় ক্লাবের কনফারেন্স হলে কলকাতার নিউক্লিয়াস পাবলিকেশন উদ্যোগে ‘গর্বের বাঙালি’ শীর্ষক উত্তর পূর্ব ভারতের কৃতি বাঙালিদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ডঃ তপোধীর ভট্টাচার্য একথাগুলো বলেন।
তিনি বলেন, এই শহরেই জন্মে ধূলোমাটি গায়ে নিয়ে বড় হয়েছেন তিনি এবং মৃত্যু অবধি এখানেই থাকবেন। কর্মরত অবস্থায় দেশ বিদেশের বিভিন্ন স্থানে সংবর্ধিত হয়েছেন তিনি। কিন্তু শিলচরের মাটিতে এই সন্মাননা পেয়ে অনেক খুশি হয়েছেন।
তিনি বলেন, এরকম আরেকটি সংবর্ধনা পেয়ে তিনি খুশি হয়েছিলেন, যেখানে তাঁর শেখর রয়েছে। সেখানে তাঁর পূর্ব পুরুষ বসবাস করতেন। বাংলাদেশের বিয়ানিবাজারে তাকে সংবর্ধনা জানানো হয়েছিল। ওইদিন তিনি সংবর্ধিত হয়ে খুশি হয়েছিলেন বলে উল্লেখ করেন।
এদিন ‘গর্বের বাঙালি’ হিসেবে তাঁকে সন্মাননা জানানোয় আয়োজক সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান তিনি। এদিন শিল্পী দেবাঞ্জন মুখোপাধ্যায়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে নিউক্লিয়াস পাবলিকেশনের কর্ণধার দীপ চক্রবর্তী, ডঃ তপোধীর ভট্টাচার্য, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ সুজিত নন্দী পুরকায়স্থ, বিডিএফের মুখ্য উপদেষ্টা প্রদীপ দত্তরায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন।
স্বাগত বক্তব্যে দীপ চক্রবর্তী বলেন, তাঁর আহ্বানে সন্মাননা প্রাপ্তরা অনুষ্ঠানে এসে তাঁকে গর্বিত করেছেন। নিউক্লিয়াস পাবলিকেশন উত্তর পূর্বের কৃতি বাঙালিদের ‘গর্বের বাঙালি’ সন্মাননা জানানোর সুযোগ পেয়ে গর্বিত বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে ‘গর্বের বাঙালি’ সন্মাননায় মনোনীত শিক্ষায় ডঃ তপোধীর ভট্টাচার্য, বিজ্ঞানে অশোক সেন, চিকিৎসায় ডাঃ সুজিত নন্দী পুরকায়স্থ, সাহিত্যে মিথিলেশ ভট্টাচার্য, ভাষা সেনানী প্রদীপ দত্তরায়, খেলায় জহরলাল গুপ্ত, সাংস্কৃতিক সংগঠক নিখিল পাল, সমাজ সেবায় দিলীপ কুমার পাল প্রমুখের হাতে ফুলের বুকে ও সন্মাননা তুলে দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে সংবাদপত্র জনমত, ডানা, সীমানা ছাড়িয়ে, গোয়েন্দা রহস্য ও ম্যাগাজিন আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হয়।
এছাড়া অনুষ্ঠানে দুটি গ্রন্থ ডাঃ রুহুল আমিনের ‘নীল সাদা আর লাল হলুদ’ এবং বাহার আহমেদ চৌধুরীর ‘কিংবদন্তী কিশোর কুমার’ উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানে রূপম সংস্থার শিল্পীরা উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন।