শংকরদেব অসমিয়া সমাজকে অমৃতরসে সিক্ত করেছেন বললেন, মুখ্যমন্ত্রী
গুয়াহাটি, ৪ ডিসেম্বর : শুধু তৃতীয় এবং চতুৰ্থ শ্ৰেণির চাকরিতেই নিজেদের চাওয়া-পাওয়া সীমাবদ্ধ না-রেখে প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানালেন মুখ্যমন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
ড০ হিমন্ত বিশ্ব শৰ্মা রবিবার আউনিআটি সত্ৰের উত্তর গুয়াহাটি শাখার উদ্যোগে আয়োজিত তিনদিনের নামঘর সমারোহে মুখ্য অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
হাইস্কুল এবং উচ্চতর মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীৰ্ণ হওয়া জালুকবাড়ি বিধানসভা সমষ্টির মেধাবী ছাত্ৰ-ছাত্ৰীদের জন্য চাংসারি হাইস্কুল ময়দানে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভায় সমষ্টির বিধায়ক হিসাবে অংশগ্ৰহণ করেন।
এখানেই তিনি পড়ুয়াদের প্রতিযোগিতা সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানান। আহ্বান জানান সরকারি তৃতীয় চতুর্থ শ্রেণির চাকরিকেই শুধু নিজেদের আকাঙ্ক্ষা হিসেবে আঁকড়ে না থাকতে।
নামঘর সমারোহে ভাষণে মুখ্যমন্ত্ৰী আউনিআটি সত্ৰের সত্ৰাধিকার পীতাম্বর দেবগোস্বামী এবং তাঁর সহযোগীদের এই আধ্যাত্মিক সমারোহ আয়োজন করার জন্য কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
রাজ্যের বিভিন্ন প্ৰান্ত থেকে আসা একশরণ নামধৰ্মের অনুগামীদের এই সমাবেশ রাজ্যের সামাজিক-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে কৃষ্ণভক্তির যে প্ৰবাহ তা বহুদূর এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে বলেও মুখ্যমন্ত্ৰী উল্লেখ করেন।
মহাপুরুষ শ্ৰীমন্ত শংকরদেব নব বৈষ্ণব আন্দোলনের মাধ্যমে আধ্যাত্মিকতাবাদের প্ৰবাহ সূচনা করেছিলেন উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, মধ্য যুগের এই গুরুজন অসমিয়া সমাজে অমৃত রস প্ৰদান করেছিলেন।

পাঁচশ বছর পূৰ্বে এই মহাপুরুষ ভক্তিবাদের যে উন্মেষ সাধন করেছিলেন তা আজও রাজ্যের সামাজিক-সাংস্কৃতিক জীবনধারাকে গভীরভাবে প্ৰভাবিত করছে। মহাপুরুষ শ্ৰীমন্ত শংকরদেবের অন্যতম প্রধান শিষ্য আধ্যাত্মিকতার এই দর্শন শক্তিশালীকরণের লক্ষ্যে বিরাট ভূমিকা রেখে গেছেন।
পরে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ কৃতী পড়ুয়াদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী। ছাত্রছাত্রীদের তাদের সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, এই সমষ্টি থেকে প্রথম ২০০১-তিনি বিধায়ক নির্বাচিত হন। তখন থেকেই এখানকার শৈক্ষিক পরিমণ্ডলের ক্রমশ উন্নতি ঘটছে।
তিনি পরিসংখ্যান তুলে ধরে এই সমষ্টি থেকে ছাত্রছাত্রীদের পাশের হার উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ছে বলে জানান। তিনি উপস্থিত ছাত্রছাত্রীদের প্রতি আহ্বান জানান তারা যেন তৃতীয় ওরচতুৰ্থ শ্ৰেণির চাকরিতেই নিজেদের চাওয়া পাওয়া সীমাবদ্ধ না-রাখে। তাদের প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহবান জানান মুখ্যমন্ত্ৰী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।
মুখ্যমন্ত্ৰী বলেন, গত দুটি দশকে জালুকবাড়ি সমষ্টি এবং এর সংলগ্ন এলাকার উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক অগ্রগতি হয়েছে। সৰ্বভারতীয় আয়ুৰ্বেদ প্রতিষ্ঠান সহ একাধিক পরিকাঠামো প্রকল্প আগামী দিনে সচল হয়ে উঠবে।
তিনি আশা প্ৰকাশ করে বলেন, সবদিক দিয়েই দেশের মধ্যে অসমকে একটি উল্লেখযোগ্য রাজ্যে পরিবৰ্তন করার ক্ষেত্রে জালুকবাড়ি গুরুত্বপূৰ্ণ ভূমিকা নিতে সক্ষম হবে। আজকের এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাজ্য সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ননীগোপাল মহন্ত, প্রাইড ইস্ট এন্টারটেইনমেন্টের অধ্যক্ষা তথা পরিচালন সঞ্চালক রিনিকি ভূইয়াঁ শৰ্মা, কামরূপের উপায়ুক্ত কীৰ্তি জাল্লি প্ৰমুখ উপস্থিত ছিলেন।