সুভ্রজিত আচার্য, জয়পুর উধারবন, ২৯ ডিসেম্বর : কাছাড় জেলার হরিনগর গাঁও পঞ্চায়েত এলাকার নাগরিকরা বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মী নিদান দাশের প্রতারণায় নাজেহাল।
অনেক দিন ধরে নিদান দাশ নামের এক ব্যাক্তি হরিনগর গাঁও পঞ্চায়েত এলাকার প্রতিটি ঘর থেকে মাসিক রিডিং সংগ্রহ করার কাজ করে আসছে।
স্থানীয় নাগরিকদের কাছে সে অনুরোধ করেছিল যে মাসিক বিদ্যুৎ বিল যেন তার হাতে দিয়ে দেন এবং সে লক্ষীপুর বিদ্যুৎ বিভাগের কার্যালয়ে গিয়ে জমা করে রশিদ এনে দিবে।
এরজন্য তাকে অতিরিক্ত ২০ টাকা করে দিতে হবে।
যেমন অনুরোধ তেমন কাজ, স্হানীয়রাও চিন্তা করে দেখেন যে হরিনগর থেকে লক্ষীপুর যেতে কমপক্ষে একজন ব্যাক্তির ১৫০ টাকা লাগবে, সেখানে নিদান এলাকার ছেলে তার হাতে দিলে কম খরচে বিদ্যুৎ বিলটা মিটানো যাবে।
ধীরে ধীরে এলাকার প্রত্যেকটি পরিবার তার হাতে বিদ্যুৎ বিল দিতে শুরু করেন। প্রথমে কিছু দিন সে বিল জমা করে রশিদ এনে দিয়েছিল। কিন্তু বিগত ২০১৮ থেকে শুরু হয় তার প্রতারণামূলক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড।
দেখা গেছে ২০১৮ সাল থেকেই সে গ্রামের পিছপড়া অঞ্চলের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষদের তার প্রতারণার শিকার বানিয়েছে।
এভাবে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিটি ঘর থেকে বিদ্যুতের মাসিক রিডিং সংগ্রহ করার সাথে মানুষের কাছ থেকে প্রতিমাসে বিদ্যুৎ বিল সংগ্রহ করে আসছে।
কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যে নিদান দাশের হাতে যারা বিদ্যুৎ বিলের টাকা দিয়েছেন তাদের অধিকাংশ লোকের বিলই জমা হয়নি।
এদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের তরফ থেকে এসে বিল বকেয়া থাকা ঘর গুলোর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করতে শুরু করেছে। বিগত দিনেও এই এলাকার অনেক ঘর থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে তার একমাত্র কারণ এই নিদান দাশ।
এমনকি স্থানিয় নাগরিকদের কথা অনুযায়ী সে ৫- ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিলের নাম করে নিয়েছে, কিন্তু তার কাছে বিলের কাগজ বা রসিদ চাইলেই সে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করার ধমক দিয়ে থাকে।
তার এধরনের প্রতারণার শিকার হয়ে বকেয়া বিল মিটাতে স্থানীয়দের গরু ছাগল ইত্যাদি বিক্রয় করতে হয়েছে।
বিভাগীয় কতৃপক্ষকে নিদান দাশের ব্যাপারে বার বার অভিযোগ জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি বলে বিষ্ফোরক মন্তব্য করেন স্থানীয়রা।
বিভাগীয় কতৃপক্ষ বলছেন নিদান দাশ (নিধু) বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারী নয়, কিন্তু স্থানীয়দের প্রশ্ন যদি নিদান দাশ বিভাগীয় কর্মচারী না হয় তাহলে সে কি ভাবে? এবং কার নির্দেশে মাসিক রিডিং সংগ্রহ করে আসছে? স্থানিয় নাগরিকরা কাছাড়ের জিলা শাসক, উধারবন্দের বিধায়ক সহ বিভাগীয় কতৃপক্ষের কাছে অতিশীঘ্রই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিনম্র অনুরোধ জানিয়েছেন।