গণ আওয়াজ, অনলাইন ডেক্স, ৩ সেপ্টেম্বর, শনিবার : বাংলাদেশ আকাশে আজ শনিবার উড়ল মায়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর পাঁচটি ফাইটার জেট। শুধু তাই নয় গোলাবর্ষণও করেছ ফাইটার জেট।
তবে হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজিজ সংবাদ মাধ্যমকে জানান, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু বাজার সীমান্তের বিপরীতে দেড়-দুই কিলোমিটার দূরত্বে মায়ানমারের পাহাড়ি ‘খা মং সেক’ অঞ্চল রয়েছে।
দীর্ঘ ২৩ দিন ধরে ওই এলাকায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন আরাকান আর্মির তুমুল লড়াই চলছে।
অন্যান্য দিনের চেয়ে আজ যুদ্ধের তীব্রতা বাড়িয়েছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সীমান্তের ৪০ নম্বর পিলারের কাছে বনাঞ্চলে সকালে টানা তিন ঘণ্টা হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ, মর্টার শেল ও বোমা নিক্ষেপ করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।
জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, বাংলাদেশের যে অংশে মায়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর ছোড়া মর্টার ও গুলি এসে পড়ছে সেখানে লোকবসতি তেমন নেই।
তবে বাংলাদেশিদের ২০টির বেশি রাবার বাগান রয়েছে। শ্রমিকেরা আতঙ্কে বাগান ছেড়ে তুমব্রু বাজারের দিকে চলে আসতে দেখা গেছে।
যুদ্ধের তীব্রতা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের ঘুমধুমের বাসিন্দাদের পাশাপাশি শূন্যরেখার আশ্রয়শিবিরে থাকা চার হাজারের বেশি রোহিঙ্গা আতঙ্কে দিনযাপন করছেন।
সীমান্তের একটি রাবার বাগান থেকে আসা এক শ্রমিক গোলাম মাওলা সংবাদ মাধ্যকে বলেন, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তাঁদের বাগানে দুটি মর্টার শেল এসে পড়েছে।
দুটি হেলিকপ্টার এই গোলাবর্ষণ করছে। মাটি থেকেও ওপরের দিকে গুলি ছোড়া হচ্ছিল। দূর থেকে আন্য আরও চার-পাঁচটি যুদ্ধবিমান চক্কর কেটে হেলিকপ্টারকে পাহারা দিচ্ছিল।
শত শত গুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হয় ওই হেলিকপ্টার থেকে। বিকট শব্দে ও আতঙ্কে শ্রমিকরা এলাকায় অবস্থান না করে তুমব্রু বাজারের দিকে পালিয়ে এসেছেন।
এর আগে গত ২৮ আগস্ট দুপুরে মায়ানমার থেকে ছোড়া দুটি মর্টার শেল বাংলাদেশ অংশে এসে পড়েছিল জানায় পুলিশ ও বাংলাদেশ সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনি।
উল্লেখ্য যে, মায়ানমারের যে এলাকাতে সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির লড়াই চলছে, সেটির বাংলাদেশের তুমব্রু বাজার সংলগ্ন।
বাংলাদেশ অংশে রোহিঙ্গাদের একটি আশ্রয়শিবির রয়েছে। দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর ধরে মায়ানমারের রোহিঙ্গাদের ৬২১টি পরিবারের ৪ হাজার ২০০ জনের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছেন।
গোলাবর্ষণ, মর্টার শেল ও বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় আতঙ্কিত গোটা এলাকা।
ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও পুলিশ পরিদর্শক সোহাগ রানা প্রথম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মায়ানমার সীমান্তের অভ্যন্তরেই তুমুল লড়াই চলছে।
গোলাগুলি হচ্ছে, হেলিকপ্টার ও জেট ফাইটার আকাশে চক্কর দিচ্ছে। গুলির শব্দ এপার থেকে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু কারা গোলাগুলি করছে, তা জানা সম্ভব হচ্ছে না। আবু বক্কর নামে তুমব্রু বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, যুদ্ধের তীব্রতা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজার ফাঁকা হয়ে পড়েছে। স্কুল-মাদ্রাসা–মক্তবে শিক্ষার্থীর উপস্থিতিও কমে আসছে। আতঙ্কে লোকজন ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।