আগরতলা, ১৩ জানুয়ারি : বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে ত্রিপুরার রাজনীতিতে একটি সমীকরণ সামনে এসেছে। রাজ্যের ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং মিত্র ইন্ডিজেনাস পিপলস ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা (আইপিএফটি) দলের মধ্যে ভাঙ্গন ধরেছে।
এদিকে ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করে চলেছে প্রদ্যোত বিক্রমের নেতৃত্বাধিন বিরোধী দল টিপরা মোথা। আইপিএফটি বিজেপির সঙ্গ ত্যাগ করে টিপরা মোথার সাথে হাত মেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
১৩ জানুয়ারী প্রদ্যোত দেব বর্মা গুয়াহাটিতে আইপিএফটি নেতা অঘোর দেববর্মার সাথে দেখা করেন এবং উভয় দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ভবিষ্যত জোটের কাঠামো নিয়ে আলোচনা করেন।
দুটি দল একত্রিত হয়ে নতুন নাম ও প্রতীক নিয়ে আত্মপ্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে।
ইন্ডিয়া টুডে নর্থইষ্ট জানিয়েছে আইপিএফটি নেতা একান্ত কথোপকথনে এটা প্রকাশ করেছেন। আইপিএফটি বলেছে আমরা টিপরা মোথার সাথে মিশে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
গুয়াহাটি থেকে ফিরে আমরা আমাদের দলের সহকর্মী ও কার্যনির্বাহী সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করব। আমাদের দাবি একই যা সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা।
আঘোর দেববর্মা বলেছেন, আমরা একই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে একত্রিত হয়ে আসছি এবং দলীয় সদস্যদের সাথে পরামর্শ করার পরে আনুষ্ঠানিকভাবে এটি ঘোষণা করব।
এছাড়াও টিপরা মোথা ত্রিপুরায় ফেব্রুয়ারি-মার্চে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বিধানসভা নির্বাচনে আদিবাসীদের ঐক্য গঠনের জন্য বিজেপি মিত্র আইপিএফটির সমর্থন চেয়েছেন।
যদিও ক্ষমতাসীন বিজেপি টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইবে, যা সিপিআইএম, কংগ্রেস, টিএমসি এবং উঠতি আদিবাসী দল টিপরা মোথার চ্যালেঞ্জের সম্মুখিন হবে।
২০১৮ সালে আইপিএফটি-এর সাথে জোট বেধে বিজেপি রাজ্যে দুই দশকের সিপিআইএম সরকারকে উৎখ্যাত করেছিল।
এবার আইপিএফটি প্রতিদ্বন্দ্বী শিবিরে যোগদান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন টিএমসি যখন বাংলা ভাবাবেগ নিয়ে রাজ্যে পা রাখার চেষ্টা করছে, সেই সময় টিপরা মোথা এবং আইপিএফটি একত্রিত হলে ভোটের সমীকরণ বদলে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রদ্যোত দেব বর্মা বলেছেন, টিপরা মোথা আইপিএফটির প্রস্তাব বিবেচনা করে আমরা আইপিএফটি প্রতীক দাও ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি যা নির্বাচন কমিশন দ্বারা স্বীকৃত।
এর আগে টিপরা মোথা প্রধান আইপিএফটি-কে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন যাতে পার্টিকে তার দলের সাথে হাত মেলাতে অনুরোধ করা হয়।
তিনি বলেন যে আইপিএফটি স্বায়ত্তশাসিত জেলা পরিষদ-ত্রিপুরা উপজাতীয় অঞ্চল স্বায়ত্তশাসিত জেলা পরিষদ এলাকাকে “টিপ্রাল্যান্ড”-এ উন্নীত করার দাবি টিপরা মোথার চেয়ে মৌলিকভাবে আলাদা নয়।
বৃহত্তর টিপ্রাল্যান্ডের জন্য আমাদের চাহিদার মধ্যে খুব বেশি মৌলিক পার্থক্য নেই এবং দাবি অনন্য নয়, এটা একই রাজ্যের আদিবাসীদের জন্য একটি স্থায়ী সাংবিধানিক সমাধান।
প্রদ্যোত দেব বর্মা চিঠিটিতে লিখেছেন, তিপ্রাসদের অস্তিত্ব বলি দেওয়ার সময় অন্য কোনও বিষয় বিবেচনা করতে পারি না। টিপ্রাসরা টিপরাল্যান্ড বা বৃহত্তর টিপ্রাল্যান্ডের সুরক্ষায় বেঁচে থাকুক এবং বিদ্যমান থাকুক এটাই চাই ।