ক্রীড়া সংবাদ, ২০ জানুয়ারি : ভারতীয় খেলাধুলা একাংশ দুর্নীতিবাজ প্রশাসকদের জন্য কলংকিত। ক্রীড়া জুড়ে কিছু সংখ্যক ফেডারেশন প্রধান রয়েছে, যারা নিজেদের জন্য খেলাধুলায় লজ্জা নিয়ে এসেছেন।
উত্তরপ্রদেশের কায়সারগঞ্জের বর্তমান বিজেপি সাংসদকে খেলাধুলাই রাজনৈতিক উচ্চতা দিয়েছে এবং টানা তৃতীয় মেয়াদের জন্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রেসলিং ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া-এর সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন।
কিন্তু এই নিয়োগের পর থেকে উচ্চ-ক্ষমতাবান হওয়ায় সমস্যায়ও পড়তেও পড়েছেন।
২০২১ সালের ডিসেম্বরে অনূর্ধ্ব-১৫ জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপের সময় একজন প্রতিযোগী অযোগ্য হওয়ার পরও যখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য জোর দিয়েছিল সেই সময় তিনি একজন বয়স্ক কুস্তিগীরকে চড় মেরেছিলেন।
ফোগাট এবং কো-এর অভিযোগ সত্ত্বেও ক্রীড়া মন্ত্রকের সাথে জড়িত থাকার কারনে সিং তার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন ও পদ ছাড়তে অস্বীকার করেছেন।
ভারতীয় খেলাধুলার আরও একটি প্রহসনমূলক অধ্যায় হল ২০১২ সাল। সেই সময় ভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন সুরেশ কলমাদি।
কলমাদিকে তদন্তের আওতায় আনা হয়েছিল, ভারতের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন কমনওয়েলথ গেমস পরিচালনার কিছু দিক তদন্ত করতে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) কে বলেছিল।
ভারত ২০১০ সালের কমনওয়েলথ গেমসের আয়োজক ছিল, তখন খেলোয়াড়দের চেয়ে বেশি বিতর্ক লাইমলাইটে উঠে আসে।
যৌন ব্যবসা থেকে শুরু করে দুর্বল টিকিট বিক্রির কারনে কলমাদিকে ২০১১ সালে সিবিআই গ্রেপ্তার করে এবং আইওএর সভাপতির পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়।
পাবলিক ফান্ডের অপব্যবহারের জন্য ২০২২ সালের জুলাইয়ে আন্তর্জাতিক হকি ফেডারেশনের সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয় নরিন্দর বাত্রাকে।
একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির সদস্যপদও ত্যাগ করতে হয়েছে, যা অনেক ক্রীড়া উৎসাহি এবং হকি অনুরাগীদের হতবাক করে।
বাত্রা দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য ২০২১ সালে দ্বিতীয়বারের মত সভাপতি পদটি পুনরুদ্ধার করেছিলেন। এরজন্য তাঁকে সিবিআই-এর তদন্তের সম্মুখিন হতে হয়েছিল।
ভারতীয় ফুটবলও প্রশাসকদের ব্যক্তিগত লাভালাভ এবং অব্যবস্থাপনার জন্য বারবার ভক্ত ও খেলোয়াড়দের হতাশ করেছে।
কিন্তু চেয়ারটি প্যাটেলের কাছে খুবই প্রিয় ছিল।
অল ইন্ডিয়া ফেডারেশন অফ ফুটবল (এআইএফএফ) এর সভাপতি হিসাবে তার প্রায় ১২ বছরের মেয়াদ ২০২০ সালের ডিসেম্বরে শেষ হয়েছিল, কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তাকে মার্চিং আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত কিছু সময়ের জন্য পদে ছিলেন।
প্যাটেলের আগে কংগ্রেস দলের হেভিওয়েট নেতা প্রিয়া রঞ্জন দাশমুন্সি ছিলেন, তিনি ১৯৮৯ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এআইএফএফ পরিচালনা করেছিলেন।
ডিসেম্বরে শীর্ষ পদে পুনঃনির্বাচিত হওয়ার আগে প্যাটেল ২০০৯ সালের অক্টোবরে এআইএফএ-এর পূর্ণ-সময়ের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন।
ফিফা এবং এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন থেকে একটি চিঠির ব্যবস্থা করে এআইএফএফ-এর স্থগিতাদেশের ব্যবস্থা করার জন্য প্যাটেলকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল।
তাকে সভাপতির পদ ফিরিয়ে না দেওয়া হলে এআইএফএফ-কে সাসপেনশনের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। পরে নতুন করে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে এআইএফএফ-এর ধরেন কল্যাণ চৌবে। ফিফা পরে ভারতীয় ফুটবল সংস্থাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছিল।