শিলচর, ১৬ মে : বাংলা ভাষার শহিদদের আত্মবলিদানের অমর দিবস উনিশে মে।
এই দিবসকে নিয়ে অনেক রাজনীতি হয়েছে, কিন্তু এখন এই রাজনীতি বন্ধ করতে জোরালো আওয়াজ তুলার আহ্বান জানাল বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
বিডিএফ মূখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন যে ১৯৬১ এর পর আরো ৬২ বছর অতিক্রান্ত হলেও এখনো বরাকের ভাষা শহিদদের সরকারি স্বীকৃতি জুটেনি।
মেরহোত্রা কমিশনের রিপোর্ট আজ পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। কেন্দ্র সরকার ও রেল মন্ত্রকের সবুজ সংকেত থাকা সত্ত্বেও রাজ্যসরকার ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণ আটকে রেখেছে।
বাংলাভাষীর সংখ্যা রাজ্যের এক তৃতীয়াংশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাকে সহযোগী ভাষার স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।
অপরদিকে রাজ্যের জনসংখ্যার পাঁচ শতাংশ থাকা সত্বেও বোড়ো ভাষা রাজ্যের সহযোগী সরকারি ভাষা।
দিশপুরে বিধানসভা বা বিধায়কদের আবাসগৃহের নামফলকে অসমিয়ার সাথে বোড়ো ভাষা ব্যাবহৃত হলেও বাংলার কোথাও কোন অস্তিত্ব নেই।
আসাম আন্দোলনের ৮৮০ জন শহিদকে স্বীকৃতি তথা পরিবারবর্গকে সরকারি অনুদান দিলেও ১৯ শের শহিদরা আজও ব্রাত্য। এসবকে রাজনীতি ছাড়া আর কি বলা যায়? প্রশ্ন তুলেন বিডিএফ নেতা।
প্রদীপ বাবু বলেন যে প্রতিবছর উনিশ উপলক্ষে মিছিল হয়, শ্রদ্বাঞ্জলি দেওয়া হয়, সন্ধ্যায় প্রদীপ, ধুপকাঠি জ্বলে তারপর আবার আমরা সব ভুলে যাই।
এবার নতুন একটি সংগঠন মিছিল বের করছে, এটি আনন্দের কথা। কিন্তু যারা এইসব মিছিলে অংশ নিচ্ছেন তাঁরা যদি এইসব সরকারি বৈষম্যের বিরুদ্ধে জোরদার আওয়াজ না তুলেন তবে তা হবে নেহাৎ দ্বিচারিতা।
তিনি বলেন যারাই এবার শহিদদের স্মৃতিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন সবাই একযোগে ভাষা শহিদদের সরকারি স্বীকৃতির দাবিতে সরব হোন, সোচ্চার হন মেহরোত্রা কমিশনের রিপোর্ট অবিলম্বে প্রকাশের দাবিতে।
ভাষা শহিদ স্টেশন নামকরণ ও বাংলাকে সরকারি সহযোগি ভাষার স্বীকৃতির সপক্ষে আওয়াজ তুলুন সেটাই হবে ভাষা শহিদদের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলি।
বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক আরো বলেন যে বরাকের ১৪ জন বিধায়ক ও সাংসদদের মধ্যে একমাত্র কমলাক্ষ্য দে পুরকায়স্থ ছাড়া কাউকে এসব নিয়ে আওয়াজ তুলতে কখনো দেখা যায়নি।
এছাড়া বরাক বিজেপি কিংবা আরএসএস, ভিএইচপি ও বজরং দলও এসব নিয়ে নীরব।
দত্তরায় বলেন এদের সবাই যদি এসব নিয়ে একযোগে সরব হন তবে আমরা অবশ্যই দাবি আদায় করতে সমর্থ হব, তাই তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন।
এছাড়া প্রদীপ বাবু জানান যে বরাকের পাশাপাশি এবার ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় শহিদ দিবস পালন করবে মাতৃভাষা সুরক্ষা সমিতি। এজন্য সংগঠকদের সাধুবাদ জানান তিনি।