জুলি দাস
করিমগঞ্জ, ১১ জুন : আগামী ২ অক্টোবর রাজ্যে ১ কোটি গাছ লাগানোর ঘোষনা করেছেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী ড০ হিমন্তবিশ্ব শর্মা।
প্রত্যেক জেলায় সরকারের পক্ষ থেকে এর জন্য টার্গেট বেঁধে দেওয়া হয়েছে। করিমগঞ্জে ওই দিন ১৪ লক্ষ ৭৩ হাজার চারা গাছ লাগানো হবে।
এরমধ্যে ৯ লক্ষ চারা গাছ তৈরি হয়ে গেছে। বাকি চারা গাছগুলি আগামী তিনমাসের মধ্যে তৈরি হয়ে যাবে জেলা বন আধিকারিক (সোশ্যাল ফরেস্টি) মতিউর রহমান জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন ছয়টি নার্সারিতে বেশিরভাগ চারা তৈরি হয়ে গেছে, বাকি চারাগুলিও আগামী কয়েক মাসের মধ্যে হয়ে যাবে।
করিমগঞ্জ বন বিভাগের আওতায় বেশ কয়েকটি নার্সারি রয়েছে। এগুলি হচ্ছে আকাইডুম, পাহাড়ি এলাকা দুখিপুর, হাতিগেনাই, কালামাগরু, বটরশি ইত্যাদি।
এরমধ্যে পাথারকান্দির আকাইডুম স্থায়ী নার্সারি, বাকিগুলি হচ্ছে অস্থায়ী। আকাইডুমের নার্সারি থেকে প্রতি বছর ১ লক্ষ ১১ হাজার গাছের চারা উৎপাদন করা হয়।
বাকি নার্সারিগুলিতে প্রয়োজন অনুযায়ী চারা উৎপাদন করা হয়। বটরশির নার্সারি রাতাবাড়ির পাহাড়ি এলাকা দুখিপুরের অধীনে করা হচ্ছে।
করিমগঞ্জে ৯ লক্ষ চারা গাছের মধ্যে ১৪ লক্ষ ৭৩ হাজার উৎপাদন হয়ে গেছে।
এরমধ্যে রয়েছে ৪০ হাজার আগর, ২৫ হাজার কদম, ৩৫ হাজার চন্দন, ৭৫ হাজার বগিকমা, ১৫ হাজার উরিয়াম, ২৫ হাজার আমলকি, ২০ হাজার গর্জন, ৩০ হাজার মোজ, ২৫ হাজার করই, ৬০ হাজার বহেরা, ২০ হাজার হিলিকা (হরতকি) সহ প্রায় ৫৫ হাজার গাছের প্রজাতি।
গর্জন গাছ অসমের মধ্যে শুধু বরাক উপত্যকাতেই হয়ে থাকে।
জানা গেছে, বিশ্ব রেকর্ড করার জন্য এক কোটি গাছের চারা উৎপাদন করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ড০ হিমন্তবিশ্ব শর্মা অনেক আগে বন বিভাগের শীর্ষ আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
এরপর সম্প্রতি তিনসুকিয়ায় অনুষ্ঠিত কেবিনেট সভায় এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
করিমগঞ্জে ১৪ লক্ষ ৭৩ হাজার গাছের চারা উৎপাদন করার টার্গেট সম্পূর্ণ করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে।
সম্প্রতি সিসিএফ পি শিবকুমার করিমগঞ্জে এসে গাছের চারা উৎপাদনের কাজ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
জেলা বন আধিকারিক (সোশ্যাল ফরেস্টি) মতিউর রহমান এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলোচনাকালে বলেছেন, চারা উৎপাদনের জন্য করিমগঞ্জে বিভাগীয় তরফে জৈবিক সার ব্যবহার করা হয়।
রাসায়নিক সার একদম ব্যবহার করা হয় না। কোয়ালিটি প্লেন্টিং মেটেরিয়াল (কিউপিএম) ব্যবহার করা হয় ভালো চারা উৎপাদনের জন্য।
চারা লাগানোর পর বর্তমানে ৯৮ শতাংশই জীবিত রয়েছে, মাত্র দুই শতাংশ গাছ ব্লাঙ্ক অর্থাৎ মারা গেছে। তিনি আরো বলেছেন যে ৭০ প্রজাতির গাছে ছাড় দিয়েছে সরকার।
অর্থাৎ এই গাছগুলি লাগালে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই, আগের মত আর ধরাধরি করা হবে না। গাছ লাগালে আর্থিকভাবেও স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব।
এতে রাজ্যের অর্থনীতি বৃদ্ধি পায়, কৃষকদের বিকাশ হলে রাজ্যের বিকাশ ঘটবে। ডিএফও বলেছেন, করিমগঞ্জকে ১৪ লক্ষ ৭৩ হাজার গাছের চারা লাগানোর টার্গেট দেওয়া হয়েছে।
এরমধ্যে ৯ লক্ষ গাছের চারা উৎপাদন হয়ে গেছে। যেগুলি বাকি রয়েছে সেগুলি আগামী তিনমাসের মধ্যে উৎপাদন হয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন জেলা বন আধিকারিক।