গণআওয়াজ শিলচর : শিক্ষার ঐতিহাসিক উন্নয়নের সন্ধিক্ষণে জিসি কলেজ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হল জেলাস্তরে ‘সেরা বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও মাতৃগোষ্ঠী পুরস্কার।
সামগ্রিক শিক্ষা, কাছাড়ের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা আয়ুক্ত, মৃদুল যাদব, অতিরিক্ত জেলা আয়ুক্ত অন্তরা সেন, জেলা মিশন কো-অর্ডিনেটর ও সহকারী আয়ুক্ত বহ্নিখা চেতিয়া সহ অন্যান্যরা।
এই গৌরবময় আয়োজন ছিল কাছাড় জেলার শিক্ষাক্ষেত্রে অনন্য অবদান রাখা স্কুল, শিক্ষক এবং সমাজকর্মীদের অক্লান্ত পরিশ্রমকে স্বীকৃতি জানানোর এক বিরল মুহূর্ত।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব শিক্ষার সমাজ পরিবর্তনের ক্ষমতার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি শিক্ষার মানোন্নয়নে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া শিক্ষক, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি এবং সমাজের সচেতন নাগরিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
একইসঙ্গে তিনি সকলকে আহ্বান জানান, কাছাড়ের প্রতিটি শিশুর জন্য মানসম্মত ও সার্বিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করার।
অনুষ্ঠানের অন্যতম হৃদয়স্পর্শী মুহূর্ত ছিল কটিগড়ার ১২৭টি সরকারি বিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা বিশিষ্ট সমাজসেবী প্রণকিশোর দেবের ভাষণ।
তার নিরলস প্রচেষ্টায় বহু স্কুলে ছাদ, পাখা, ডেস্ক, চেয়ার, মেঝের উন্নয়ন সহ নানা পরিকাঠামো উন্নত হয়েছে।
বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ শিশুরাই, তাই তাদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষা পরিবেশ তৈরি করা আমাদের সবার দায়িত্ব।
অপ্রতুল পরিকাঠামোর কারণে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় অসুবিধা হতে দেখেই আমার মনে হলো, আমি যদি কিছু করতে পারি, তবে সেই সুযোগ হাতছাড়া করব না।

শিক্ষার প্রকৃত অর্থ শুধু বই-পড়া নয়, বরং একটি সুস্থ পরিবেশ তৈরি করা যেখানে শিশুরা নিরবচ্ছিন্নভাবে নিজেদের ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুনতে পারে।
তার এই আত্মনিবেদনমূলক বক্তব্যে পুরো অডিটোরিয়াম করতালিতে মুখরিত হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী ভাষণে, জেলা কর্মসূচি আধিকারিক (এসএসএ), কাছাড় এবং রাজ্য বিদ্যালয় শিক্ষা পর্ষদের, কাছাড়ের আঞ্চলিক সম্পাদক ড০ বিদ্যুৎ দেব চৌধুরী জেলার সকল বিদ্যালয়কে তামাকমুক্ত অঞ্চলঘোষণার যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের কথা তুলে ধরেন।
তিনি জানান, শীঘ্রই তামাকমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে একটি স্বাক্ষর অভিযান চালু করা হবে, যেখানে অভিভাবক, শিক্ষক ও ছাত্রসমাজ একত্রিত হয়ে প্রতিশ্রুতি প্রদান করবেন।
পাশাপাশি, কাছাড় জেলায় শিক্ষার উন্নয়নে স্বেচ্ছায় অবদান রাখা সকল শুভানুধ্যায়ী ও সমাজসেবীদের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
শিক্ষাক্ষেত্রে প্রবীণ শিক্ষকদের অবদানকে সম্মান জানিয়ে, জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শক গণেশ হরিজন বলেন, অবসর গ্রহণের পরেও অনেক শিক্ষক শিক্ষার মহান ব্রত পালন করে চলেছেন।
জিসি কলেজের অধ্যক্ষ বিবাস দেব বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুধু ইট-পাথরের কাঠামো নয়, বরং শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পরিচালনা কমিটির নিষ্ঠা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠা এক মহৎ ক্ষেত্র।
অনুষ্ঠানে জেলা আয়ুক্ত মৃদুল যাদব শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও মাতৃগোষ্ঠী যারা শিক্ষার প্রসারে অবদান রেখেছেন তাদের সম্মানিত করেন।