গণআওয়াজ, শিলচর : বরাকের বেকার সমস্যা সমাধানে পরিকল্পিত কোন উদ্যোগ নেই সরকারের, তাই এই সমস্যার সমাধানে পৃথকীকরণ ছাড়া কোন বিকল্প নেই বলে মন্তব্য বরাক ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের কর্মকর্তাদের।
দলীয় কার্যালয়ে বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় বলেন বরাক উপত্যকায় রেজিস্ট্রিকৃত বেকারের সংখ্যা ছয় লক্ষ অতিক্রম করেছে।
আসাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিবছর যে প্রচুর ছাত্রছাত্রী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে বেরোচ্ছে তাঁদের কর্মসংস্থানের কোন সুযোগ নেই।
তাঁর অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা শিলচর এসে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বরাক উপত্যকার তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর পদ এখানকার ছেলেমেয়েদের জন্য সংরক্ষিত করা হবে, কিন্তু কোন প্রতিশ্রুতি পালন হয়নি।
উপত্যকার প্রতিটি সরকারি অফিসে উচ্চস্তর থেকে নিম্নস্তর, ইঞ্জিনিয়ার থেকে কেরানী পর্যন্ত কর্মীরা নিযুক্তি পাচ্ছেন ব্রহ্মপুত্র উপত্যকা থেকে।
বিগত একলক্ষ নিয়োগ নিয়গ নিয়েও প্রশ্ন তুলে বলেন, সেখানেও বরাক উপত্যকা থেকে নগন্যসংখ্যক নিযুক্তি দেওয়া হয়েছে।
আসামের এসিএস, এপিএস আধিকারিকদের মধ্যেও বাঙালিদের বঞ্চনা করা হচ্ছে বলে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এদিন প্রদীপ দত্তরায় হুঁশিয়ার করে বলেন, এই বৈষম্যের সমাধান অনতিবিলম্বে না হলে বরাকে আগুন জ্বলবে।
তিনি বলেন, আশির দশকে যে আসুর নেতৃত্বে ‘বঙাল খেদা’ আন্দোলনের মাধ্যমে আসাম উত্তাল হয়েছিল, সেই আসুর নেতারাও অগপ সরকারের সময় নিয়োগের ক্ষেত্রে বরাককে বঞ্চিত করেননি।
এমনকি মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের বরাক-ব্রহ্মপুত্র-পাহাড় ভৈয়াম শ্লোগানকে বরাকের জনগন সাদরে গ্রহণ করেছিলেন।
সেই স্লোগান আজ কেন নেই? এই প্রশ্ন তুলেন তিনি। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালে সর্বানন্দ সোনোয়াল শিলচরে ভাষা শহীদ স্মারক সংগ্রহশালা তৈরির জন্য আট কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন।
শিলচরে বিবেকানন্দ রিসার্চ ইনস্টিটিউট স্থাপনের তিনি উদ্যোগ নিয়েছিলেন, যারজন্য আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে পাঁচ বিঘা জমি দান করা হয়।
কিন্তু আজও কেন এসব কোন প্রকল্পই বাস্তবায়িত হয়নি?
দত্তরায় ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, একই বিজেপি সরকারের বিগত চার বছরের কার্যকালে বরাককে উপেক্ষা পৃথকীকরণের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এদিন, এডিরাই লিখিত পরীক্ষার সাম্প্রতিক ঘোষিত ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন তুলেন বিডিএফ-এর আহ্বায়ক হৃষীকেশ দে।
তাঁর অভিযোগ, এখানেও বরাককে বঞ্চনার আসামের বিজেপি সরকারের চক্রান্ত কাজ করছে। অথচ, এই ব্যাপারে শাসকদলের জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, মেধার ভিত্তিতে নাকি নিয়োগ হচ্ছে।
অর্থাৎ প্রকারান্তরে বোঝানো হচ্ছে, বরাকে তেমন মেধাবী নেই।
উল্লেখ্য, এর আগেও বিডিএফ বর্তমান সরকারকে জেলাভিত্তিক নিযুক্তির তালিকা প্রকাশ করার আবেদন করেছিল কিন্তু তাঁতে কর্ণপাত করেনি সরকার।
তাই সরকার যদি অবিলম্বে এব্যাপারে কার্যকরী কোন উদ্যোগ না নেয় তাহলে বিডিএফ বৃহত্তর আন্দোলন সংগঠিত করার উদ্যোগ নেবে বলে সাফ জানিয়ে দেন।