গুয়াহাটি, ২৭ সেপ্টেম্বর : বিভীষিকার ৩০/১০ ধারা বিস্ফোরণের মূল অভিযুক্ত রঞ্জন দৈমারির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছে গৌহাটি হাইকোর্ট। এছাড়া অন্য ৯ জনের পূর্ববর্তী শাস্তির আদেশ বহাল রেখেছে। তবে চারজনকে নির্দোষ বলে খালাস করে দিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ।
মঙ্গলবার গৌহাটি উচ্চ আদালতের বিচারপতি সুমন শ্যাম এবং মালাশ্রী নন্দীর ডিভিশন বেঞ্চ রঞ্জন দৈমারি এবং অন্য ছয়জনের দায়েরকৃত আপিল খারিজ করে দিয়ে অন্য তিন আসামিকে খালাস করে দেয়, যাদের সিবিআই আদালত আগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছিল।
নির্দোষ খালাসরা হল অনসাই বড়ো ওরফে অজিত বড়ো, লখরা বসুমতারি ওরফে লোবো, ইন্দ্ৰ ব্ৰহ্ম এবং জয়ন্তী ব্ৰহ্ম ওরফে জুগামি।
এছাড়া রঞ্জন দৈমারি ওরফে ডি আর নাবলা ওরফে লাসডুম ওরফে লওডুম, অজয় বসুমতারি ওরফে আওগি, রাজু সরকার, খর্গেশ্বর বসুমতারি ওরফে রাহুল ব্ৰহ্ম ওরফে খারামশ্বর, জৰ্জ বড়ো ওরফে জন ওরফে বি জওয়াখাং, রাজেন্দ্র গয়ারি ওরফে রাজেন ওরফে রিফিখাং এবং বৈশাগি বসুমতারি ওরফে বি বিথুরাইর যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় বহাল রেখেছে আদালত।
বিভীষিকাময় ৩০/১০-এর দিন সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে গুয়াহাটির তিন, বরপেটার দুই, কোকরাঝাড়ে তিন এবং বঙাইগাঁওয়ের এক জায়গায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল এনডিএফবি-র রঞ্জন দৈমারি গোষ্ঠী। নিহত হয়েছিলেন মোট ৮৮ জন এবং আহতের সংখ্যা ছিল ৫৪০। ওই ঘটনায় আহতদের বহুজন আজও পঙ্গুত্বের জীবন কাটাচ্ছেন।
২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি অভিশপ্ত ৩০ অক্টোবর ২০০৮-এর ধারা বিস্ফোরণে মূল অভিযুক্ত রঞ্জন দৈমারি সহ দশ অভিযুক্তকে নগদ জরিমানা-সহ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন সিবিআই বিশেষ আদালতের বিচারপতি অপরেশ চক্রবর্তী।
এছাড়া আরও চার অভিযুক্তকে নগদ টাকার জরিমানা-সহ খালাস করে দিয়েছিলেন বিচারপতি। ৫ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত জয়ন্তী ব্ৰহ্ম, মথুরাম ব্ৰহ্ম, প্ৰভাত বড়ো এবং নীলিম দৈমারি কারগারে ৭ বছর কাটানোয় তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০০৮ সালের ৩০ অক্টোবর গুয়াহাটি, বরপেটা, বঙাইগাঁও এবং কোকরাঝাড়ের মোট আটটি স্থানে বিস্ফোরণ সংঘটিত করেছিল রঞ্জন দৈমারির ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট অব বডোল্যান্ড। বিস্ফোরণে ৮৮ জন নিরীহ নাগরিকের মৃত্যুর পাশাপশি ৫৪০ জন আহত হয়েছিলেন।
গুয়াহাটির সিজেএম আদালত চত্বর, গণেশগুড়ি এবং পানবাজার-সহ তিন জায়গায়, বরপেটারোডে দু জায়গায়, বঙাইগাঁওয়ে এক জায়গায় এবং কোকরাঝাড়ে দু জায়গায় বিস্ফোরণ হয়েছিল। সেদিন গুয়াহাটির কয়েকজন আইনজীবীও মৃত্যুবরণ করেছিলেন। গোটা বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত ছিল রঞ্জন দৈমারি নেতৃত্বাধীন এডিএফবি।