মোস্তাফা আহমেদ মজুমদার হাইলাকান্দি, ১০ অক্টোবর : প্রতিবারের ন্যায় এবারও হাইলাকান্দিতে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা:) এর জন্মদিন পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী পালিত হয়।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে হঠাৎ করে জুলুসে মোহাম্মদী শান্তি মিছিলের অনুমতি বাতিল করার কারণে এবার হাইলাকান্দিতে জৌলুস বিহীন ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপিত হয়।
সকাল ৮ ঘটিকায় শহরের লালা রোডে থাকা জেলা আহলেসুন্নতের কার্যালয়ের সামনে আহলেসুন্নতের পতাকা উত্তোলন করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রেখে বিশ্বশান্তি কামনায় মোনাজাত করেন উত্তর পূর্বাঞ্চল আহলেসুন্নত ওয়াল জমাতের মূখ্য উপদেষ্টা বিশিষ্ট ইসলামিক পণ্ডিত মওলানা সারিমুল হক লস্কর।
এদিন হাইলাকান্দি জেলা ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন কমিটির ব্যবস্থাপনায় শহরের সিরাজপট্টী জামে মসজিদে বিভিন্ন কার্যসূচির মাধ্যমে দিনটি পালিত হয়। সকাল ৯ ঘটিকার সময় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন জেলা ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন কমিটির সভাপতি মওলানা আখতার হোসেন লস্কর।
কার্যসূচির মধ্যে প্রথম অধিবেশনে ছিল সকাল ১০ ঘটিকা থেকে বিভিন্ন স্কুল কলেজ, মক্তব, মাদ্রাসার ছাত্র ছাত্রীদের প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠান।
দ্বিতীয় অধিবেশনে ছিল বিকাল ১-৩০ মিনিট থেকে আছরের আজান পর্যন্ত বিশিষ্ট জ্ঞানী, গুণী, বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদের মূল্যবান বক্তব্য।
আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন পাবলিক উচ্চতর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সিরাজুল ইসলাম মাঝারভূইয়া, হাইলাকান্দি জেলা পরিষদের সভানেত্রীর প্রতিনিধি বিশিষ্ট সমাজসেবী মাসুক আহমেদ বড়ভূইয়া, এআইইউডিএফ যুব ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সম্পাদক রিপন মজুমদার, এনএসইউআইর জেলা উপসভাপতি মজমুল ইসলাম লস্কর, এআইইউডিএফ হাইলাকান্দি সমষ্টি কমিটির সভাপতি হোসেন আহমদ লস্কর, পশ্চিম হাইলাকান্দি ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন কমিটির সভাপতি মওলানা জসীম উদ্দীন মজুমদার ও বিশিষ্ট সমাজসেবী প্রবীণ নাগরিক আলহাজ্ব সাইবুর রহমান মীরা প্রমুখ।
প্রত্যেক বক্তারা বলেন শান্তির দূত ছিলেন মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা:)। তাঁর সমস্ত জীবনই ছিল মানুষের কল্যানে কাজ করা। তাই মহানবীর জীবনাদর্শ অনুসরণ করে চললে ইহকাল এবং পরকালে মুক্তি মিলবে।
আছরের নামাজের পর বিশিষ্টজনদের হাত ধরে জেলা ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন কমিটির বার্ষিক মূখপাত্র তোহফা-এ- ঈদে মিলাদুন্নবী নবম সংখ্যার আবরণ উম্মোচন করা হয় এবং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
এরপর তৃতীয় অধিবেশন সন্ধ্যা ৬ ঘটিকা থেকে রাত্রি ১০ ঘটিকা পর্যন্ত বিশ্বশান্তি কামনায় মোনাজাত, মিলাদ এবং ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
মহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন জেলা ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন কমিটির মূখ্য উপদেষ্টা মুফতি কাহির উদ্দিন মজুমদার।
তিনি তাঁর বক্তব্যে ইসলামিক শরীয়তের দৃষ্টিতে কোরআন এবং হাদীস দ্বারা বিশ্বনবীর জন্মদিন অর্থাৎ পবিত্র ঈদে মিলাদ পালনের বৈধতা তুলে ধরেন। বলেন,হজরত মোহাম্মদ (সা:) ছিলেন গোটা সৃষ্টি জগতের জন্য রহমত স্বরূপ।
তাঁর আগমনে খুশি এবং আনন্দের কথা মহাগ্ৰন্থ পবিত্র কোরানে উল্লেখ রয়েছে। তাই প্রত্যেক মুসলমান এমন নবীকে পেয়ে শুকরিয়া হিসেবে নবীর আগমনের দিনে খুশি এবং আনন্দ করা কর্তব্য। তিনি বিভিন্ন হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়ে মিলাদুন্নবী পালনের বৈধতা দেখিয়ে দেন। যারা বিভিন্ন সময় মিলাদুন্নবী নিয়ে অতর্কিত ভাবে বিপক্ষে কথা বলেন এদের কথায় কর্ণপাত না করারও আহ্বান জানান মুফতি কাহির উদ্দিন।
মূখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য রাখেন রাতাবাড়ী নিজামীয়া টাইটেল মাদ্রাসার শিক্ষক মওলানা আজিজুল হক। মওলানা সেলিম উদ্দিন,মওলানা ইয়াসিন আহমদ মজুমদার প্রমুখ। শেষে পবিত্র মিলাদ পাঠ করে বিশ্বশান্তি কামনায় মোনাজাত করেন টান্টুর পীরজাদা আব্দুল বাসিত চৌধুরী।
এরপর শিরণী বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। এদিনির অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন কমিটির সভাপতি মওলানা আখতার হোসেন লস্কর। কমিটির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক এস এম এম হাসান আহমদ কবির, সহসভাপতি ক্বারী নূর আহমদ লস্কর, সাংগঠনিক সম্পাদক রবিজুল রহমান বড়ভূইয়া, সহসভাপতি হাজী গুলজার হোসেন লস্কর, সহসম্পাদক সাহারুল ইসলাম বড়ভূইয়া, কার্যালয় সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন মাঝারভূইয়া, আনাম উদ্দিন চৌধুরী, ছালিম উদ্দিন বড়ভূইয়া, সালেহ আহমদ চৌধুরী, সাইনুল হক লস্কর, হাসান আহমদ লস্কর, রাহাতুজ্জামান লস্কর, মোস্তাফা আহমদ বড়ভূইয়া, সাইদুল ইসলাম লস্কর, মুরসাদ মজুমদার, সাহানূর আলম চৌধুরী, বাহারুল ইসলাম চৌধুরী ও মোস্তাফা আহমেদ মজুমদার প্রমুখ।