আগরতলা, ৬ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার : ভোট যত এগিয়ে আসছে, ত্রিপুরায় দলবদলের হিড়িক ততই বাড়ছে। বিজেপি, তৃণমূল, এমনকী সিপিএম ছেড়েও দলে দলে কংগ্রেসে যোগদান করছেন নেতা-কর্মীরা।
ত্রিপুরা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করে বলা হয়, তিনদিনে সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশী বিভিন্ন দলের কর্মী কংগ্রেসে যোগদান করেছেন।
বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে ফিরে এসেছেন প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা সুদীপ রায় বর্মনও। কংগ্রেসের ওই বিরোধী দলনেতা তৃণমূল হয়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন।
কিন্তু এক বছরও সুখে ঘর করতে পারেননি বিজেপিতে। তাই তিনি ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ফিরে এসেছেন কংগ্রেসে।
সম্প্রতি উপনির্বাচনে জিতে কংগ্রেসের বিধায়কও নির্বাচিত হয়েছেন। একইসঙ্গে কংগ্রেসকে ফের ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে সংগঠন মজবুত করতে ময়দানে নেমেছেন।
সুদীপ রায় বর্মন ও আশিস সাহা দলে ফেরার পর থেকেই উল্লেখযোগ্য হারে শক্তি বাড়তে শুরু করেছে কংগ্রেসের।
ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেস দাবি করেছে, উত্তর ত্রিপুরায় গত তিনদিনের বিজেপি, সিপিএম ও তৃণমূল ছেড়ে সাড়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি ভোটার কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। উনাকোটি ও ধলাই জেলায় দফায় দফায় চলেছে এই যোগদান।
কংগ্রেস ২০২৩-এর শুরুতেই বিধানসভা নির্বাচন ত্রিপুরায়, তার মহাশক্তিধর হয়ে ফিরে আসার চেষ্টা করছে কংগ্রেস।
কংগ্রেসের দাবি, বাম-বিরোধী ভোটারদের সমর্থনে এবং সিপিএমের একাংশের সমর্থনের কারণে বিজেপি ত্রিপুরার ক্ষমতা দখল করতে সক্ষম হয়েছিল।
কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর বিজেপি অত্যাচারী শাসকে পরিণত হয়েছে, তাই ত্রিপুরার মানুষ এখন বিজেপির হাত থেকে মুক্তি চাইছে। বিকল্প শক্তি হিসেবে তাঁরা কংগ্রেসকে বেছে নিচ্ছে বলে দাবি নেতৃত্বের।
ত্রিপুরায় ২৫ বছর বামফ্রন্ট সরকার ছিল। সিপিএম নেতৃত্বাধীন এই সরকারের বিরুদ্ধেও ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে। স্বজনপোষণ, দুর্নীতি, অনুন্নয়নের ত্রিপুরায় বিজেপি ২০১৮ সালে পরিবর্তন ঘটাতে সফল হয়।
কিন্তু বিজেপি ক্ষমতায় এসে এই চার বছরে ত্রিপুরাবাসীকে প্রতিহিংসার রাজনীতি ছাড়া আর কিছু দিতে পারেনি। দুর্নীতি আর কারসাজি করে এরা সরকার টিকিয়ে রেখেছে।
মানুষ বিজেপিকে ত্রিপুরা থেকে উৎখাত করতে চাইছে। ত্রিপুরায় এখন পরিবর্তনের আবহ তৈরি হয়েছে।
বিজেপিকে সরকার টেকাতে মুখ্যমন্ত্রী বদল করতে হয়েছে। তবুও বিজেপি দলের ভাঙন রুখতে পারেনি। দলের নীচুতলা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। উত্তর ত্রিপুরায় বিজেপি ও তৃণমূলের ১৩৮২টি পরিবার থেকে ৪৯৭৩ জন ভোটার কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। উনাকোটি, কুমারঘাট, ধলাইয়ের ৫৮৯ জন ভোটার যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে। কংগ্রেসে দফায় দফায় যোগদান চলছে। সম্প্রতি তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কংগ্রেসে ফিরে আসার পর বিজেপি ও তৃণমূলের অনেক নেতা লাইনে রয়েছেন বলে দাবি করে কংগ্রেস।