নিউজ ডেক্স, গণআওয়াজ : একের পর এক দুর্নীতির ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরও শূন্য সহনশীলতা এবং সু-শাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা ডাবল ইঞ্জিনের সরকার নীরব।
শহর এবং শহরতলীর পর এই সরকারের শাসনামলে উন্নয়নের অর্থ লুপাটে এখন জঙ্গল অভিযান শুরু হয়েছে।
কোন প্রকল্প সার্ভে হওয়ার সাথে সাথেই সরকারী বরাদ্ধ অর্থ হাপিসের ফাঁদ পেতে নিচ্ছে লুণ্ঠনকারীরা।
বহু বিতর্কিত লক্ষীপুরের বিধায়ক কৌশিক রাই-এর বিধানসভার স্থানে স্থানে এরকম ফাঁদ পাতা হলেও আশ্চর্য জনকভাবে নীরব তিনি।
এবার এই ফাঁদগুলোকে জনসমক্ষে আনতে সাংবাদিকরা পৌঁছন আসাম-মণিপুর সীমান্তের জিরিঘাটের প্রত্যান্ত এলাকা দিঘলির গভীর জঙ্গলে।
দলের প্রয়াত প্রাক্তন জেলা সভাপতি অজিত ভট্টাচার্যের হাত ধরে বিজেপির কাছাড় জেলা অফিসে পা রাখা কৌশিকের রাতারাতি কোটিপতি হয়ে উঠারও বিভিন্ন কাহিনী রয়েছে।
কিন্তু লক্ষীপুর বিধানসভার দিঘলি, বাহাদুরপুর চা বাগান, বোমা পুঞ্জি, সাইসেল পুঞ্জি, উত্তর লালপানি, উমেদনগর, কার্জন পুঞ্জি, লক্ষী নগর যোগ যোগ ধরে উন্নয়ন বঞ্চিত।
কৌশিকের বিধায়ক হওয়ার তিন বছর কেটে গেলেও এলাকার উন্নয়নে নতুন কোন প্রকল্প বরাদ্দ হয়নি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সেই সময়ে উন্নয়ন বঞ্চিত লক্ষ্মীপুরের এই এলাকার উপর দিয়ে মনিপুরের সঙ্গে যোগাযোগের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার ভারতমালা প্রকল্পে সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গেছে, বছর দু’এক আগে আরকাটিপুর থেকে মণিপুর পর্যন্ত ভারতমালা সড়ক নির্মাণের ফাইনাল সার্ভে সমাপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
এর পর থেকেই এই প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ হাপিস করতে বিভিন্ন ফাঁদ তৈরি করতে সক্রিয় হয়ে উঠে জেলার ভু-মাফিয়ারা।
আরকাটিপুর থেকে দিঘলি পর্যন্ত স্থানে স্থানে কম টাকায় জমি ক্রয় করে চলছে ইমারত তৈরির কাজ।
রাতারাতি গড়ে তুলা হচ্ছে অট্টালিকা।
বিন্নাকান্দির মত এত উন্নত জায়গা থেকে জুম্মা খান নামের এক ব্যক্তি দিঘলির এই প্রত্যান্ত এলাকায় গিয়ে রাতারাতি গড়ে তুলেছেন বিশাল আকার নার্সারি।
সেই সঙ্গে জুম্মা খান তাঁর নার্সারির গেটে ঝুলি দিয়েছেন বিজেপির পতাকা।
একইভাবে দুধপাতিলের ভু-মাফিয়া ইকবাল হোসেনও তৈরি করছেন বিশাল আকারের অট্টালিকা।
প্রায় ভীত শ্রমিকরা জানিয়েছেন, তারা কয়েক মাস থেকে দিনে রাতে অট্টালিকা তৈরির কাজ করে আসছেন।
সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে আসতে অনিচ্ছুক ইকবালের অট্টালিকার কাজের তদরকিতে থাকা এক ব্যক্তি জানিয়েছেন এখানে কোল্ডস্টোর হবে।
যে জমির উপর দিয়ে ভারতমালার সড়ক নির্মাণ করতে কেন্দ্রীয় সরকারের টীম ড্রোন দিয়ে সার্ভে করেছে সেই জমি বেশী দামে ক্রয় করে কোল্ডস্টোর করবেন ইকবাল!
এছাড়া দুধপাতিল সহ জেলার বিভিন্ন অংশ ছেড়ে এই গভীর প্রত্যান্ত অঞ্চলে!
এদিকে স্থানীয় নিরেন্দ্র তাতি জানিয়েছেন, উমেদনগর সহ লক্ষীপুরের বিভিন্ন জায়গায় চলছে ভারত মালা সড়ক প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার চক্রান্তে রাতারাতি অট্টালিকা নির্মাণের কাজ।
তিনি আশংকা প্রকাশ করে বলেন, এসব লুণ্ঠনকারীদের পাতা ফাঁদের কারনে সরকার যদি প্রকল্প বাতিল করে দেয় বা অন্যদিকে নিয়ে যায় তাহলে এই বৃহত্তর অঞ্চল প্রত্যান্ত হয়েই থাকবে।
তাই জেলা প্রশাসনকে এব্যাপারে এখনই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী জানান। অন্যদিকে লক্ষীপুরের বিধায়ক কৌশিক রাই-এর নীরবতা নিয়ে স্বাভাবিক কারনেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, সরকারী প্রকল্প লুপাটের এই চক্রান্তের পেছনে তাঁর হাত নেই তো?