জুলি দাস
করিমগঞ্জ, ২৮ অক্টোবর : স্থানীয় সুপারির বিক্রি করতে গিয়ে ইদানিং বিভিন্নভাবে পুলিশ কর্তৃক হেনস্থার শিকার হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
পরিবহন করতে গিয়েও পুলিশের ধরপাকড়ের মুখে পড়তে হয় তাদের। এর প্রতিবাদে সম্প্রতি বিভিন্ন জায়গায় সড়ক অবরোধ করেন স্থানীয় সুপারি ব্যবসায়ীরা। সড়কে সুপারি ফেলে প্রতিবাদ সাব্যস্ত করেন তারা।
তবে বিরম্বনায় পড়া ব্যবসায়ীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক সমন্বয়ক তথা পাথারকান্দির বিধায়ক কৃষ্ণেন্দু পাল।
স্থানীয় সুপারি বাজারে বিক্রির দাবিতে জেলাশাসক মৃদুল যাদবের হাতে একটি স্মারকপত্র তোলে দেন সুপারি ব্যবসায়ীরা। তখন তাদের সঙ্গে উপস্থিত হয়েছিলেন কৃষ্ণেন্দু।
জেলাশাসক বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। অন্যদিকে, স্থানীয় সুপারি ব্যবসায়ীদের পাশে রয়েছেন বিজেপি জেলা সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য।
কৃষ্ণেন্দু বলেছেন স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত কাঁচা সুপারিগুলো যাতে এলাকার কৃষকরা কোনো সমস্যা ছাড়া স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে পারেন সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে জেলাশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জেলাশাসকও বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।
তবে সুপারি বিক্রি নিয়ে সরকারি নির্দেশ না আসা পর্যন্ত বহিরাজ্যের অবৈধ সুপারি কিছুতেই স্থানীয় বাজারে বিক্রি করা যাবে না। এনিয়ে প্রশাসন সহ এলাকার সচেতন জনগণের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
গত কয়েক বছর ধরে বিদেশি ও বার্মিজ সুপারি ধরপাকড়ের নামে স্থানীয় সুপারি বিক্রিতে চরম বিপাকে পড়েছেন এলাকার কৃষকেরা।
অনেকে বিক্রির উদ্দেশ্য স্থানীয় সুপারি বাজারজাত করলেও তা অন্যত্র নিয়ে যেতে পুলিশের ভয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ক্রয় করছেন না বলে অভিযোগ।
এনিয়ে গণ প্রতিবাদে কিছুদিন পুর্বে রাজ্য সরকার সুপারি বিক্রি নিয়ে দুর্গাপূজার পর নতুন এসওপি জারি করার প্রতিশ্রতি দিলেও তা আজও কার্যকর হয়নি। সরকারের এহেন খামমখেয়ালিতে অনেকে উষ্মা প্রকাশ করেছেন।
কেননা অন্যান্য বছর দুর্গাপূজার শুরুতে ঘরোয়া কাঁচা সুপারি বিক্রি হয়ে যায়। কিন্তু এবার এসবের ঠিক বিপরিত দৃশ্য বরাক উপত্যকায়।
কাঁচা সুপারিকে বিশেষ প্রক্রিয়াজাত করে রটা সুপারি তৈরী করা হয়। যা পরবর্তিতে গুটকা হিসাবে রঙিন প্যাকেটে মোড়ে বিক্রি হয়।
এসব ক্ষতিকারক গুটকা নিষিদ্ধ করতে কেন্দ্র সরকার বার কয়েক পদক্ষেপ নিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
এদিকে, সরকারি গ্যাঁড়াকলে পড়ে কাঁচা সুপারির অনেকটা মরশুম পের হয়ে গেছে। ফলে অনেকের বাড়ি ও বাগানে উৎপাদিত সুপারি গাছেই পেকে ঝরে পড়তে শুরু করেছে।
এতে স্বাভাবিকভাবে আর্থিক লোকসানের মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
তাছাড়া বরাকের প্রতিটি বাজারের সুপারি ক্রয়-বিক্রয়ের একটি যোগসুত্র রয়েছে।
কৃষ্ণেন্দু পাল বলেছেন, পার্শ্ববর্তী রাজ্য থেকে সুপারি আসা কোনোভাবে চলবে না। অবৈধ পন্থায় স্থানীয় সুপারির আড়ালে অন্য সুপারি বিক্রি করা চলবে না।
এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মত যে এসওপি জারি করা হবে, তা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে হবে। তবে স্থানীয়ভাবে সুপারি বিক্রি করার ব্যবস্থা করে দিতে জেলাশাসক মৃদুল যাদবের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে পুলিশ সুপার পদ্মনাভ বড়ুয়ার সঙ্গেও প্রয়োজনীয় কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক সমন্বয়ক।