হাইলাকান্দি ১৮ নভেম্বর : মহাবীর লাচিত বরফুকনের ৪০০ তম জন্ম জয়ন্তী উদযাপন হাইলাকান্দিতে শুরু হয়েছে শুক্রবার থেকে।
৮ দিন ব্যপী এই কার্যসূচির প্রথম দিনে শুক্রবার হাইলাকান্দি শহরের একাদশ শহীদ সরণি এলাকায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুলিশ বিভাগ গ্রাণ্ড সেলুট জ্ঞাপন করে মহাবীর লাচিত বরফুকনের উদ্দেশ্যে।
শুক্রবার জেলা প্রশাসন থেকে জারি করা এক নির্দেশে ৮ দিনব্যাপী এই কার্যসূচির কিছুটা রদবদল করা হয়েছে।
প্রথম দিনের শুক্রবার বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর পরম্পরাগত নৃত্য পরিবেশন সহ ছিল নৃত্য নাটিকা ‘জয়তু বীর লাচিত’।
আগামী ২৪ নভেম্বর বীর লাচিত বরফুকনের চারশত তম জন্মদিবস হলেও এর প্রায় সপ্তাহখানেক আগেই হাইলাকান্দি জেলা পুলিশ প্রশাসন বীর লাচিতের জন্মদিন পালনের কার্যসূচী গ্রহণ করে।
মূলতঃ রাজ্যের স্বরাষ্ট্র বিভাগের নির্দেশে প্রতিটি জেলায় ১৮ নভেম্বর বীর লাচিত বরফুকনের জন্মদিবস উদযাপনের প্রস্তুতিস্বরূপ বিশেষ কর্মসূচি হাতে নেয় হাইলাকান্দি জেলা পুলিশ প্রশাসন।
পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বর্ণাঢ্য প্যারেডের আয়োজন করা হয়। এদিন সকাল ৯ টায় একাদশ শহিদ সরণিতে বীর লাচিতের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন জেলাশাসক নিসর্গ হিবরে ও পুলিশ সুপার নবনীত মহন্ত।
এদিনের প্যারেড কমান্ডার জেলা পুলিশের সীমান্ত শাখার ডিএসপি নির্মল ঘোষের নেতৃত্ব গ্রাণ্ড সেলুট জানায় পুলিশ বিভাগ সহ এনসিসি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ছাত্রীরা।
প্যারেড -২ আই সি ছিলেন এবিএসআই দেবাশীষ সিংহ।
এতে পুলিশের ডিস্ট্রিক্ট এক্সিকিউটিভ ফোর্স (ইউ বি ও এবি) ২১ এপি আই আর ব্যাটেলিয়নের তিনটি বাহিনী, মনাছড়া জওহর নবোদয় বিদ্যালয়(ছাত্রী) এস এস কলেজ এনসিসি, ইন্দ্রকুমারী গার্লস হাইয়ার সেকেন্ডারি স্কুল, সরকারি ভি এম হাইয়ার সেকেন্ডারি স্কুল, হরকিশোর হাইস্কুল, হরিচরণ মহামায়া গার্লস হাইস্কুল ও পাবলিক হাইয়ার সেকেন্ডারি স্কুল অংশ গ্রহণ করে। ব্যণ্ড পরিচালনায় কাটলীছড়া সরস্বতী বিদ্যানিকেতন।
অন্যদিকে, মার্চপাস্টের পর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী রাজপথেই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সবাইকে মুগ্ধ করে তুলেন।
এদিন স্টেপ আপ ডান্স একাডেমির পক্ষে নিত্য প্রশিক্ষক অরুণ সিনার পরিচালনায় এক মনোজ্ঞ নৃত্যনাটিকায় বীর লাচিতের জীবনের বিভিন্ন মুহূর্ত তুলে ধরা হয়।
পাশাপাশি ভূপেন হাজারিকার কন্ঠে লাচিত বরফুকনকে নিয়ে রচিত একখানি গানের উপর নৃত্য পরিবেশন করেন শিক্ষিকা ববি দত্ত নিঁওগ ডিইজী শইকীয়া ও পরীমল্লিকা গগৈ। পরম্পরাগত ধামাইল নৃত্য পরিবেশন করে রংধনু শিল্পী গোষ্ঠী। পরিবেশিত হয় রংমাই নাগা নৃত্য, ত্রিপুরী নৃত্য এবং মনিপুরী নৃত্যও।
জেলা শাসক নিসর্গ হিবরে ছাড়াও ডিডিসি রণজীৎ কুমার লস্কর, জেলা পরিষদের কার্যাবাহী আধিকারিক জয়দীপ শুক্লা, অতিরিক্ত জেলা শাসক যথাক্রমে ত্রিদিব রায়, দীপমালা গোয়ালা, সপ্ততি এন্দো, সি আর পি এফ সহকারী কমানডেণ্ট, নবাগত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডঃ বিদ্যুৎ দাস বড়ো, ডিএসপি সদর সুরজিৎ চৌধুরী, জেলা ভিডিপি ডেপুটি এডভাইসার অমিত রঞ্জন দাস সহ বিভিন্ন স্তরের পুলিশ আধা সামরিক বাহিনীর কর্তা ব্যাক্তি, জেলা বিজেপি সভাপতি স্বপন ভট্টাচার্য, বরিষ্ঠ নাগরিক স্কুল ছাত্র ছাত্রী সাধারণ জনগন।
অনুষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন শংকর চৌধুরী।
এদিকে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুক্রবার রাতে জারি করা কার্যসূচি অনুসারে ১৯ নভেম্বর থাকছে জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে রচনা প্রতিযোগিতা, ২০ নভেম্বর থাকছে জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলিতে বৃক্ষরোপণ, এস এস কলেজে রক্তদান শিবির, হাইলাকান্দি শহর ও লালা শহরে স্বচ্ছ ভারত অভিযান এবং হাইলাকান্দি শহরের এসকে রায় সিভিল হাসপাতাল, জেলা কারাগার, মাটিজুরি রোডের চিলড্রেন হোম, এডুকেশন কমপ্লেক্সের পার্শ্ববর্তী উজালা হোম, সাধের গৃহ, লক্ষ্মীর বন্ধের ওল্ডএজ হোম এবং লতাকান্দির প্রতিষ্ঠানে ফলমূল বিতরণ।
২১ নভেম্বর জেলা পর্যায়ের একটি শোভাযাত্রার আয়োজন করা হবে।
জেলাশাসকের কার্যালয় থেকে এই রেলিটি বের হয়ে বাটা পয়েন্ট, ওল্ড হসপিটাল পয়েন্ট, কালিবাড়ি পয়েন্ট হয়ে শোভাযাত্রাটি শহর পরিক্রমা করবে।
২২ নভেম্বর থাকছে কলেজ এবং হাইয়ার সেকেন্ডারি পর্যায়ে সেমিনার, ডিবেট, এস এস কলেজের খেলার ময়দানে বিভিন্ন স্পোর্টস ইভেন্ট।
অনুরূপভাবে ২৩ নভেম্বর পেইন্টিং কম্পিটিশন ক্যানভাস পেইন্টিং কার্যসূচিটি ডিস্ট্রিক্ট লাইব্রেরির সম্মুখে অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় শহরের রবীন্দ্রভবনে আয়োজন করা হয়েছে বীর চিলারায়ের উপর নাটক সংস্কৃতিক কার্যক্রম ফ্যান্সি ড্রেস প্রতিযোগিতা।
২৫ নভেম্বর সমাপনী দিনেও শহরের রবীন্দ্রভবনে ও আয়োজন করা হয়েছে জেলা পর্যায়ের কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠান। থাকছে পুরস্কার বিতরণী। এতে সকাল ১০ টা থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ জায়ান্ট স্ক্রিনে লাইভ স্ট্রিমিং করে দেখানো হবে।