শিলচর, ২২ নভেম্বর : ১৮ নভেম্বরের বরাক বনধের সফলতার পর ফের দাবী নিয়ে সরব হল বিডিএফ।
মঙ্গলবার শিলচর পেনসনার্স ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বরাকের জনগণের দাবীগুলো মেনে নিতে ২৭ নভেম্বর কেবিনেট বৈঠক পর্যন্ত চরম সময়সীমা বেঁধে দেয়।
বিডিএফ মুখ্য আহ্বায়ক প্রদীপ দত্তরায় ১৮ নভেম্বরের বরাক বনধকে বিডিএফ বা সহযোগী কোন রাজনৈতিক দলের বনধ ছিলনা বলে সমস্ত কৃতিত্ব বরাকের জনগনের উপর দিয়ে সরকারের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে স্বতস্ফূর্ত প্রতিবাদ হিসাবে তুলে ধরেন।
শাসক দলের ঔদ্ধত্য, এনকাউন্টার ও বুলডোজার নীতি, বিগত বন্যায় স্থানীয় নেতাদের ভূমিকা, অনৈতিক পুরকর বৃদ্ধির চক্রান্ত এবং বরাকের কর্মপ্রার্থীদের প্রতি বঞ্চনা এইসব মিলিয়ে জনগনের মধ্যে যে প্রচন্ড ক্ষোভ রয়েছে তার বহিঃপ্রকাশ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
দত্তরায় হুমকির সুজে বলেন, সরকার যদি এই দেয়াল লিখন পড়তে না পারে তবে তাদেরকে অবশ্যই এর মূল্য চোকাতে হবে।
শিলচরে যে, ইউনানী চিকিৎসালয়ের উদ্বোধন হয়েছে সেখানেও স্থানীয় নিযুক্তি না হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রদীপ বাবু।
বিডিএফ মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জয়দীপ ভট্টাচার্য বলেন, এরকম একটি সফল বনধ পালনের পরও দাবি গুলি নিয়ে সরকারি তরফে এখন পর্যন্ত কোন প্রতিক্রিয়া নেই।
তিনি বলেন আগামী ২৯ নভেম্বর শিলচরে কেবিনেট বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে আমরা আশাবাদী যে এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর পদে বরাক থেকে অন্ততঃ ১০০০ চাকরির নিশ্চয়তা দেবেন। এতে যদি বিজেপি দলের ক্যাডারদেরও দেওয়া হয়, তাতেও তাদের আপত্তি নেই।
এছাড়াও নেডার সভাপতি হিসেবে আসামের মুখ্যমন্ত্রীকে মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী তথা কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে আলোচনা করে উত্তর পুর্বের বিভিন্ন রাজ্যে অনুপজাতি নির্যাতন বন্ধ এবং বরাকের স্থানীয় সুপারি বানিজ্যকে প্রসাশনিক জটিলতা থেকে মুক্ত করারও দাবী জানান।
২৯ নভেম্বর কেবিনেট মিটিং পর্যন্ত এসব ব্যাপারে সরকারের যদি ইতিবাচক সাড়া না পাওয়া যায় তবে বিডিএফ বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে। এব্যাপারে আলোচনার জন্য আগামী ২৭ নভেম্বর বিডিএফ সর্বদলীয় বৈঠকের আয়োজন করবে বলেও জানান জয়দীপ।
বিডিএফ খাইদেম কান্ত সিং বলেন, সরকার যদি দাবি করে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিক হয়েছে তবে বরাকের তিন জেলার মনোনীত প্রার্থী তালিকা প্রাপ্ত নম্বর সহ প্রকাশ করুক এবং গৌহাটি হাইকোর্টের কোন নিরপেক্ষ বিচারককে দিয়ে বরাকের কর্মপ্রার্থীদের উত্তরপত্র আবার যাচাই করা হোক।
তাতে আসল সত্য বেরিয়ে আসবে।
এছাড়া মেঘালয় তথা উত্তর পুর্বে অনুপজাতিদের নিরাপত্তার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের বিবৃতি দাবি করেন তিনি।
বিডিএফ এর আইনুল হক মজুমদার বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে বীর লাচিত নিয়ে বরাক থেকে লক্ষাধিক রচনা পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন বরাকের মানুষ যে আসামের ইতিহাস, সংস্কৃতি নিয়ে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল এটা তারই প্রমাণ। ভুপেন হাজারিকাকেও আসাম তথা পশ্চিম বঙ্গের বাঙালি এরকমই আপন করে নিয়েছে। গৌহাটিতে বীর লাচিতের পাশাপাশি জাতীয় বীর নেতাজি সুভাষচন্দ্র ও জাতীয় কবি রবীন্দ্রনাথের মুর্তি প্রতিষ্ঠার আবেদনও জানিয়েছেন আইনুল।